নিউ ইয়র্কে স্বাধীনতা দিবসের এক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে এখন কোন মানুষের নিরাপত্তা নেই। জননিরাপত্তায় নিয়োজিত আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর উপর মানুষ আস্থা হারিয়ে পেলেছে। তারা নিজেইরা এখন আইনের রক্ষক হয়ে ভক্ষক। আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রকাশ্যে দিবালোকে মানুষ হত্যা করছে। প্রতিনিয়ত লংঘন হচ্ছে মানবাধিকার।
স্বাধীন দেশে মানুষের স্বাভাবিক মৃতে্যুর গ্যারান্টি নেই। দেশে এ ধরণের অরাজক পরিস্থিতি কারো কাম্য নই। দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য বক্তারা দাবী জানান।
রাইটার্স ফোরাম অফ নর্থ আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ২৩ মার্চ নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের ফুডকোর্ট রেস্টুরেন্টের এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে লংআই ল্যান্ড সিটি ইউনিভার্সিটির মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. শওকত আলী বলেন, বাংলাদেশ এখন পুলিশী রাষ্ট্রে পরিনত হয়েছে। পুলিশ দেশের সাধারণ মানুষ উপর যেভাবে অত্যাচার নির্যাতন চালাচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের সময়ও পাক হানাদার বাহিনী সাধারণ মানুষকে এভাবে নির্যাতন করেনি। পুলিশের গুলিতে মানুষের মৃত্যু এখন স্বাভাবিক হয়ে দাড়িয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ব্যবসা শুরু দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সরকার ইসলাম ও রাসূল (সাঃ) কে অবমাননাকারীদের ৩ স্তরের নিরাপত্ত বেষ্টনি দিয়ে সভা সমাবেশ করাচ্ছে। অপরদিকে নাস্তিকদের শাস্তি দাবীরত আলেম ওলামাদেরকে দলীয় কর্মী ও পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে হত্যা করছে।
বিশেষ অতিথি সাংবাদিক কাজী শামসুল মুক্তিযুদ্ধের সময় সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন, ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের বিপক্ষের দু’পক্ষই যুদ্ধাপরাধ করেছে। বর্তমান মানবতা বিরোধী বিচারে দু’পক্ষকেই বিচারের আওতায় আনা উচিত।
তিনি আরো বলেন, তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস শিক্ষা দেয়া যাচ্ছেনা। রাজনৈতিক দলগুলো শুধু দলীয় অবস্থান থেকে নিজেদের মতো করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস শিক্ষা দিচ্ছে। তিনি তরুণদের সব দল মতের উর্দ্ধে উঠে স্বেচ্ছায় মুক্তিযুদ্ধের যথাযথ ইতিহাস জানার আহবান করেন।
সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সাংবাদিক তাসের খান মাহমুদ বলেন, স্বাধীনতার ৪২ বছরে এসেও বাংলাদেশের মানুষের বাক স্বাধীনতা নেই। এমনকি মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতাও নেই। ধর্মীয় পোষাক পরলেও নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার শাহবাগের আন্দোলনের দেশে হিংষা বিদ্বেষ সৃষ্টি করেছে। রাষ্ট্রকে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে দাড় করিয়ে দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তে ভারত দিন পর দিন হত্যাকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে, অথচ বাংলাদেশ সরকার শক্তভাবে প্রতিবাদ করার সাহসও নেই।
আলোচনা সভায় রাইটার্স ফোরাম অফ নর্থ আমেরিকার সভাপতি আব্দুল্লাহ আল আরিফের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্যে দেন, মানবাধিকার নেতা মাহতাব উদ্দিন, ড. আবুল কাসেম, প্রফেসর কাজী মোহাম্মদ ইসমাঈল, মোশারফ হোসাইন, ওয়াসেক বিল্লাহ ও মাওলান রশিদ আহমেদ। সভা পরিচলনা করেন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নঈম উদ্দিন।
No comments:
Post a Comment