ন্বিউ ইয়র্ক : ক্যাঙ্গারো ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে মাওলানা সাঈদীসহ আলেমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বিচারের প্রতিবাদে নিউইয়র্কে সমাবেশ করেছে মাওলানা সাঈদী মুক্তি আন্দোলন পরিষদ যুক্তরাষ্ট শাখা।সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাঈদী বিরুদ্ধে অন্যায় রায় দিলে প্রতিবাদে জীবন দিতে বাংলাদেশে হাজার হাজার তরুণ কাফনের কাপড় নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে।
১০ ফেব্রুয়ারি রোববার নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের পালকি সেন্টারে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশ শুরু করার আগে মাওলানা সাঈদী পোস্টার ছেঁড়া নিয়ে সাঈদী ভক্ত এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
আওয়ামী লীগের এক কর্মী মাওলানা সাঈদীর পোস্টার ছিঁড়ে ফেললে সাঈদী ভক্তরা তাদের ধাওয়া করে। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ আওয়ামী লীগকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে সাঈদী মুক্তি আন্দোলন যুক্তরাষ্ট্র শাখা সভাপতি আবদুল খালেকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন মানবাধিকার নেতা মাহতাব উদ্দীন আহমেদ, মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন, এটর্নি আবদুল আজিজ, মনিরুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, আবু ওবায়দা, মাহবুবুর রহমান, অ্যাডভোকেট আবুল হাসেম ও প্রফেসর কাজী ইসমাঈল।
সমাবেশে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আবু সামীহাহ সিরাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রাশেদুজ্জামান।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে ফরমায়েশী রায় আনার চক্রান্ত চলছে। ইতোমধ্যেই দেশের শীর্ষ স্থানীয় আইনবিদরা এ ট্রাইব্যুনাল ভেঙে দিয়ে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানিয়েছেন। একইভাবে জাতিসংঘও এ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
আবদুল কাদের মোল্লার রায় প্রত্যাহার ও মাওলানা সাঈদীসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের মুক্তি দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য সরকার এই ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছে।
‘এখন ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম প্রভাবিত করার উদ্দেশেই সরকার পরিকল্পিতভাবে সারাদেশে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। ট্রাইব্যুনালকে নিজেদের ইচ্ছামত নিজস্ব ছকে চলতে বাধ্য করার জন্য সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন’ যোগ করেন তারা।
বক্তারা বলেন, বছরের পর বছর কোরআনের তাফসির করে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী এ দেশের মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। এই নিরপরাধ মুফাসসিরের বিরুদ্ধে অন্যায় রায় হলে দেশে-বিদেশে সর্বস্তরের জনতা গর্জে উঠবে।
সমাবেশে বলা হয়, কোরআনের সেবককে বিতর্কিত ট্রাইব্যুনালের রায়ে অন্যায়ভাবে সাজা দেয়া হয় তাহলে তা হবে ইসলামপ্রিয় জনতার আবেগে কুঠারাঘাত করা। জনগণ কোনোভাবেই ষড়যন্ত্রের রায় মেনে নেবে না।
সমাবেশে দাবি করা হয়, মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ শতাব্দীর জঘন্য ও নিকৃষ্টতম মিথ্যাচার। প্রসিকিউশন অভিযোগ প্রমাণের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো সাীকেই হাজির করতে পারেনি। তার বিরুদ্ধে আনা ১৯টি অভিযোগের একটিও প্রমাণিত হয়নি।
বক্তারা বলেন, স্কাইপি কেলেঙ্কারির মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালে চলা প্রহসনের বিচার জাতির সামনে পরিস্কার হয়ে গেছে। এর মাধ্যমে ট্রাইবুনালের প্রধান বিচারকের মুখোশ জাতির সামনে উন্মোচিত হয়েছে। ট্রাইবুনালের গ্রহণযোগ্যতা শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে।
তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রসিকিউশনের আরেক সাী সুখরঞ্জন বালী মাওলানা সাঈদীর পে স্যা দিতে এলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে আদালতের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করেছে। আজও তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
‘এইসব জালিয়াতি’ জনগণের সামনে প্রকাশ হবার পরও যদি কোনো অন্যায় রায় দেয়ার ষড়যন্ত্র করা হয়, তাহলে সরকারকে চরম পরিণতিই ভোগ করতে হবে হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
শাহবাগের আন্দোলনকে সরকারের সাজানো নাটক দাবি করে তারা বলেন, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সাঈদীসহ ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের হত্যার নীলনকশা তৈরি করেছে সরকার।
No comments:
Post a Comment