Tue, 22 Jan, 2013 01:23:38 PM
নিউ ইয়র্ক : মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অভিযোগে অভিযুক্ত মাওলানা আবুল কালাম আযাদের ফাঁসির রায়ে আমেরিকার নিউ ইয়র্কে প্রবাসীরা পক্ষে-বিপক্ষে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
বিচারের নামে আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে ‘প্রহসন’ করা হয়েছে অভিযোগ করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক যুবকমান্ড। সোমবার রাতে (বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার ভোর ৬টা) নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে অনুষ্ঠিত হয় এ প্রতিবাদ সভা। প্রতিবাদ সভা শেষে জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিটের কাবাব কিংয়ের সামনে সংগঠনটি মানববন্ধন করে।
প্রতিবাদ সভায় যুক্তরাষ্ট্র যুবকমান্ডের সভাপতি আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন হিউম্যানিটি ক্লাবের অব আমেরিকার প্রেসিডেন্ট রশীদ আহমেদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফখলরুল ইসলাম, শফিকুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আরাফাত রহমান, কুতুব উদ্দিন ও খবীরুজ্জামান। সভা পরিচালনা করেন মনজুর আহমদ।
মাওলানা আবুল কালাম আযাদের ফাঁসির রায় প্রত্যাখ্যান করে প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, এই রায় আওয়ামী লীগের তথাকথিত ট্রাইব্যুনালের সাজানো নাটক। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল এবং দেশের বরণ্য আলেমদের নাজেহাল করার লক্ষ্যে সরকার সরকার এ রায় দিয়েছে। দেশে বিদেশে সরকারের প্রহসনের এই ট্রাইব্যুনালকে প্রত্যাখ্যান করেছে। জাতি আওয়ামী ট্রাইব্যুনালের মিথ্যা এ রায় মানে না বলে মন্তব্য করেন নেতারা।
নেতারা বলেন, বিশ্বের প্রভাবশালী সম্প্রচার মাধ্যম বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস, শীর্ষস্থানীয় সংবাদ সংস্থা রয়টার্স, এএফপি ও এপি এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ ট্রাইব্যুনালকে ‘বিতর্কিত ট্রাইব্যুনাল’ বলে মন্তব্য করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ আদালতকে জাতিসংঘও স্বীকৃতি দেয়নি। সরকার মনগড়া আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে বিচারের নামে দলীয় কর্মীদের বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে শুরু থেকেই প্রতারণা করে আসছেন।
নেতৃবৃন্দ ট্রাইব্যুনালের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, মাওলানা আযাদের বিরুদ্ধে সরকার এক তরফা রায় দিয়েছে।
তারা সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রহসনের বিচার বন্ধ করুন না হলে দেশে ও প্রবাসে সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার গড়ে তোলা হবে তখন পালানোর পথ পাওয়া যাবে না। এ সময় তারা মঙ্গলবার ওজনপার্কে প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা দেন।
এদিকে মাওলানা আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে দেয়া রায়ের প্রত্যাখান করে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসেলভেনিয়া ও দেলোয়ার রাজ্যেও প্রতিবাদ সভা করেছে প্রবাসীরা। এসব প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন মোহাম্মদ রশিদ সালিম, মোহাম্মদ আলমগীর চৌধূরী, আটিকুর রহমান, সায়েদ নজরুল ইসলাম, জয়নাল আবেদীন, খুরশীদ আলম ও বখতিয়ার রানা প্রমুখ।
অন্যদিকে, আবুল কালাম আযাদের ফাঁসির রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে নিউ ইয়র্কে আওয়ামী লীগ সমর্থকেরা আনন্দ-উল্লাস এবং মিষ্টি বিতরণ করেন। জ্যাকসন হাইটসে পালকি পার্টি সেন্টারের সামনের এ আনন্দ উল্লাসে নেতাদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ডা মসুদুল হাসান, প্রচার সম্পাদক হাজী এনাম, দফতর সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের সভাপতি মিসবাহ আহমেদ এবং সেক্রেটারি ফরিদ আরশ, শ্রমিক লীগ সেক্রেটারি আজিজুল হক খোকন প্রমুখ।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান এ রায়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। দীর্ঘ ৪১ বছর পর হলেও একাত্তরের ঘাতকদের বিচার বাংলার মাটিতে সম্পন্ন হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে কলঙ্কমুক্ত করার পথ সুগম হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি অবশিষ্ট যুদ্ধাপরাধীদেরও দ্রুত বিচারের দাবি জানান।
এদিকে মাওলানা আযাদের ফাঁসির রায়ে যুক্তরাষ্ট্র উদীচী আনন্দ প্রকাশ করছে। এই গুরুত্বপূর্ণ ও সাহসী রায়ের জন্য বিচারকমণ্ডলীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছে সংগঠনটি। একই সঙ্গে দেরিতে হলেও সরকারের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নের সূচনাকে অভিনন্দিত করছে। অবিলম্বে তাকে খুঁজে বের করে রায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
এছাড়াও মানবতাবিরোধী প্রথম রায়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগ, নিউ ইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ ও স্টেট আওয়ামী লীগ।
সূত্র : http://www.natunbarta.com/expatriate/2013/01/22/8019/0dafb594f1a069859123150362e9d132
No comments:
Post a Comment