Thursday, February 28, 2013

সাঈদীর রায় প্রত্যাখান ও গণ হত্যার প্রতিবাদে জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবর স্মারকলিপি







সাঈদীর রায় প্রত্যাখান ও গণ হত্যার প্রতিবাদে

 জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবর স্মারকলিপি 


নিজস্ব রিপোর্ট ( নিউ ইয়র্ক, ২৮ ফেব্রুয়ারী, বৃস্পতিবার) :  বিশ্ব বরণ্য আলেম জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ঘোষিত রায় প্রত্যাখ্যান এবং গণ হত্যার প্রতিবাদে জাতিসংঘের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন  করেছে ‘কোয়ালিশন অফ বাংলাদেশী আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন’।
সাঈদীর রায়কে প্রহসনের রায় উল্লেখ জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন এর কাছে স্বারকলিপি পেশ করা হয়েছে। এছাড়াও নিউইর্য়কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের কাছেও স্মারকলিপি দিয়েছে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
২৮ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার সকালে (বাংলাদেশ সময় একই দিনে রাত্রে) কোয়ালিশন অফ বাংলাদেশ আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন এ সব কর্মসূচি পালন করে। প্রচন্ড শীতের মধ্যে মাওলানা সাঈদী ভক্ত উপস্থিতিতে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাইটার্স ফোরামের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল আরিফ। বক্তব্য রাখেন প্রফেসর কাজী মো. ইসমাঈল, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল আওয়াল, ব্যবসায়ী মাওলানা আবু ওবায়দা,  রাইটার্স ফোরাম অফ নর্থ আমেরিকার সাধারণ সম্পাদক নঈম উদ্দিন, ক্যাবী সংগঠনের নেতা ডা. আজিজ উল্যাহ,  ত্রুীড়া সংগঠক মনির হোসেন, নারী নেত্রী শাহানা মাসুম, রোকেয়া আখতার ডেইজি, ইসমত আরা প্রমুখ।
সমাবেশ পরিচলনা করেন বাংলাদেশী আমেরিকান প্রগ্রেসিভ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান।


 মাওলানা সাঈদীর ফাসিঁ রায় প্রত্যাখান করে বক্তারা বলেন, এই রায় আওয়ামীলীগের তথাকথিত ট্রাইব্যুনালের সাজানো নাটক। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল এবং দেশের বরণ্য আলেমদেরকে নাজেহাল করার লক্ষ্যে সরকার এ রায় দিয়েছে। মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে সরকার নির্দেশিত ছকে দেয়া রায় দেশে-বিদেশে মুসলিম জনতা প্রত্যাখ্যান করছে। রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যাখান করে রায়ের বিরুদ্ধে দেশে বিদেশে হাজার হাজার মানুষ স্বত:স্ফুর্ত ভাবে ময়দানে নেমে আসে প্রতিবাদ জানাতে।

নেতৃবৃন্দ বলেন,  মাওলানা সাঈদী ভক্ত ইসলাম প্রিয় জনতা দেশে যখনই আন্দোলনে নেমে আসে তখন আওয়ামী-যুব-ছাত্রলীগ পুলিশ প্রশাসনের ছত্রছায়ায় নিরীহ মানুষের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে শতাধিক মানুষকে হত্যা করেছে। যা ইতিহাসে এক নজিরবিহীন গণ হত্য। পুলিশের গুলির আঘাতে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে আরো পাচঁশতাধিক মানুষ। গ্রেফতার হয়েছেন কয়েক হাজার নিরীহ মানুষকে।


নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, শাহবাগের আন্দোলনকারী নাস্তিক-মুরতাদদের খুশি করতেই এই রায় দেয়া হয়েছে। এই রায়ের মাধ্যমে মাওলানা সাঈদীর প্রতি চরম অবিচার করা হয়েছে বলে তারা উল্লেখ্য করেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বিশ্বের প্রভাবশালী স¤প্রচার মাধ্যম আল জাজিরা, বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস, শীর্ষস্থানীয় সংবাদ সংস্থা রয়টার্স, এএফপি ও এপি এবং মানবাধিকার সংগঠন গুলো এ ট্রাইব্যুনালকে ‘বিতর্কিত ট্রাইব্যুনাল’ বলে বহুবার মন্তব্য করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ আদালতকে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দেয়নি। সরকার মনগড়া আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে বিচারের নামে দলীয় কর্মীদের বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে শুরু থেকেই প্রতারণা করে আসছেন।


তারা বলেন, স্কাইপ কেলেংকারীর মাধ্যমে ট্রাইবুনালে চলা প্রহসনের বিচার জাতির সামনে পরিষ্কার হয়ে গেছে। এর মাধ্যমে ট্রাইবুনালের প্রধান বিচারকের মুখোশ জাতির সামনে উন্মোচিত হয়েছে। ট্রাইবুনালে বিচারের নামে চলা প্রহসন দেখে বিশ্বব্যাপী এর গ্রহণযোগ্যতা শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। তারা বলেন, প্রসিকিউশনের আরেক সাক্ষী সুখরঞ্জন বালী মাওলানা সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে এলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে আদালতের সামনে থেকে গ্রেফতার করেছে। আজো তাঁর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। মূলত, দেলোয়ার শিকদার নামের এক রাজাকার অপরাধ মাওলানা সাঈদীর উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।


 


নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে দেয়া ফাঁসির রায় বাতিল করে তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানায়ে বলেন, সরকারের চরম ফ্যাসিবাদী রূপ দেশকে পতনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। দেশের বর্তমান অবস্থায় প্রবাসীরা হতাশ। গুটি কয়েক তোষামোদকারী পরিবেষ্টিত হয়ে শেখ হাসিনা  বাস্তবতা ভুলে গেছেন। আজ শেখ মজিবুর রহমান বেচেঁ থাকলে তথাকথিত প্রহসনের ট্রাইব্যুনালের এ বিচারের অবস্থা দেখে তিনি লজ্জা পেতেন।

বক্তাগণ সরকারকে হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রহসনের বিচার বন্ধ করে তাওহিদী জনতার প্রিয় ব্যক্তিত্ব আল্লামা সাঈদীসহ সকল ইসলামী নেতৃবৃন্দুকে নি:শর্ত মুক্তি দিন। নচেৎ দেশে ও প্রবাসে সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার গড়ে তোলা হবে তখন পালানোর পথ পাওয়া যাবেনা। নেতৃবৃন্দ সরকারের অনৈতিক কাজের প্রতিবাদে দেশ প্রেমিক সকলকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।
দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর সহযোগিতা কামনা করে নেতৃবৃন্দ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশে একদিনে এতো মানুষ হত্যার রেকর্ড নেই। এরআগে পিলখানা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একদিনে ৬৭ সেনা অফিসার হত্যার করা হয়েছিলো। এ দুটি গণহত্যার বিচারের জন্য সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন বক্তারা।

উল্লেখ্য, ৫ ফেব্রুয়ারীর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত পুলিশ ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ প্রকাশ্যে ৮১ জন হত্যা করেছে। এরমধ্যে হরতাল ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে  ৭৫ জনকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। এছাড়াও প্রায় ৩ হাজার লোক গুলিবিদ্ধ হয়েছে। একদিনে ৭০ খুনের ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে এ প্রথম।





No comments:

Post a Comment