নিউইয়র্ক (২৪ ফেব্রুয়ারী, রোববার) : মহান আল্লাহ-রাসূল (সাঃ), ইসলাম সম্পর্কে ঔদ্ধত্যপূর্ণ কটূক্তিকারী ব্লগারদের শাস্তির দাবিতে সমাবেশ ও হরতালের ঘটনায় নিরীহ মুসলমানদের হত্যা এবং নাস্তিক ব্লগারদের বিচার দাবিতে নিউইয়র্কে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ওলামা মাশায়েখরা। এ সময়ে আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মী সমাবেশে বিশৃক্মখলার সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। ওলামা-মাশায়েখদের তোপের মুখে এবং পুলিশের উপস্থিতে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা সমাবেশ স্থল ত্যাগ করে। পরে পুলিশের প্রিজেন্ট ৬৬ কর্মকর্তাদের পরামর্শে সুগন্ধা রেস্টেুরেন্টের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে আলেমরা। বিক্ষোভে হাজার হাজার ধর্মপ্রমাণ মুসলমান যোগ দেয়। গত রোববার নিউইয়র্কের ব্রুকলীনের সুগন্ধা রেস্টুরেন্টের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বায়তুল জান্নাহ মসজিদের অধ্যাপক মাওলানা মুহিববুর রহমানের সভাতিত্বে বক্তব্য দেন শেখ ইসমাঈল খান, হাফেজ রফিকুল ইসলাম, মাওলানা ইব্রাহিম খলিল, মাওলানা জাকারিয়া মাহমুদ, মুফতী খালেদ, মুফতী রুহুল আমিন, মাওলানা আব্দুর রহমান খান ও আবু সামীহহা সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।
সমাবেশে মাওলানা মুহিববুর রহমান বলেন, কুরআন ও হাদিস অনুযায়ী মহান আল্লাহ-রাসূল (সাঃ) ও ইসলামকে অস্বীকারকারীরা মুরতাদ ও নাস্তিক। এ ধরনের মুরতাদদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মুসলমান হিসেবে নাস্তিক মুরতাদদের শাস্তি দেয়াও তার ঈমানী দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এরপরও মুরতাদদের শাস্তি না দিয়ে পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে মুসলমানদের হত্যা করলো আমরা ধরে নিবো প্রধানমন্ত্রীও মুরতাদদের পক্ষের শক্তি। সমাবেশে ও হরতালে নিরীহ মুসলমানদের হত্যার বিচার দাবি করে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার দাবি করেছেন মাওলানা মহিব।
পাবনা ও মানিকগঞ্জে পুলিশের গুলীতে ৭ জন মুসল্লি নিহত ও শতাধিক লোক গুলীবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অন্যান্য বক্তারা বলেন, শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে এভাবে ইসলামের জন্য আন্দোলনরত লোকদের গুলী করে হত্যা করা হবে তা কল্পনা করা যায় না। সরকার নাস্তিকদের খুশি করতে ও ইসলামবিরোধী শক্তিকে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার সুযোগ দিয়ে আলেম-ওলামা ও সাধারণ মুসল্লিদের হত্যা করে দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
বক্তারা নাস্তিক-মুরতাদ ব্লগারদের গ্রেফতার করে শাস্তি প্রদান এবং খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা জাফরুল্লাহ খানসহ এই আন্দোলনে গ্রেফতারকৃত সকলের নিঃশর্ত মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার দাবি করেন। মাওলানাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুফতী মাওলানা আব্দুল মালেক, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, হাফেজ আব্দুল্লাহ আল আরিফ, মাহাফেজ আশরাফ উল্লাহ, মাওলানা আব্দুল করিম, মাওলানা নঈম উদ্দিন, মাওলানা মোদাচ্ছের, মাওলানা দিদারুল ইসলাম, শিহাব উদ্দিন, মাওলানা রুহুল আমিন, মাওলানা ইব্রাহিম, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মাওলানা মাকসুদ, মাওলানা জুনায়েদ, মাওলানা সাইফুল্লা বিলাল, মাওলানা শহিদ উল্লাহ, মাওলানা হাফেজ সুফিয়ান, মাওলানা আলমগীর ও মাওলানা আব্দুল কাদের প্রমুখ। এছাড়াও কনকনে শীত উপেক্ষা করে হাজার হাজার প্রবাসী বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত হয়।
আওয়ামী লীগের বিশৃক্মখলা : পূর্ব ঘোষিত অনুষ্ঠানের স্থল সুগন্ধা রেস্টুরেন্টে নির্ধারিত সময়ের আগে আওয়ামী লীগের ১৫/২০ কর্মী স্টেইজের স্থান দখল নেয়। পরে নির্দিষ্ট সময়ে ওলামা মাশায়েখরা অনুষ্ঠান স্থলে প্রবেশ করলে দু'পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দু'পক্ষ পাল্টা-পাল্টি শ্লোগান দিতে থাকে। এ অবস্থায় অনুমতি না থাকায় পুলিশ আওয়ামী লীগকে রেস্টুরেন্ট থেকে বের করে দেয়। পরে ওলামা মাশায়েখরা পুলিশের উপস্থিতিতে রেস্টুরেন্টের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এ সময় অনুষ্ঠান স্থলে পুলিশের হেলিকপ্টার ও ব্যাপকসংখ্যক পুলিশ টহল দিতে দেখা যায়।
No comments:
Post a Comment