বাংলাদেশে হত্যাযজ্ঞ বন্ধে জাতিসংঘসহ
বিশ্ব সম্প্রদায়কে উদ্যোগ নেয়ার আহবান
নিউ ইয়র্ক: বাংলাদেশে আলেম উলামা ও সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা বন্ধে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে মাজলিসুল উলামা ইউএসএ। অন্যদিকে বাংলাদেশে গণহত্যা বন্ধের দাবী জানিয়ে প্রতিবাদী র্যালী করেছে বাংলাদেশী আমেরিকান প্রগ্রেসিভ ফোরাম। এছাড়াও রাতের অন্ধকারে মতিঝিল শাফলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতা কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছে আসসাফা ইসলামিক সেন্টার নিউ ইয়র্ক।
মাজলিসুল উলামা ইউএসএ:
হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে রাতের অন্ধকারে নির্বিচারে নিরস্ত্র আলেম উলামা ও সাধারণ মানুষকে হত্যার প্রতিবাদে সভা করেছে নিউ ইয়র্কের ইমাম ও আলেমদের সংগঠন মাজলিসুল উলামা। ৬ মে রোববার নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের আসসাফা মসজিদে এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। সভা থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে হেফাজতে ইসলাম ঘোষিত ১৩ দফা দাবী মেনে নিয়ে সবধরণের হত্যাকান্ড বন্ধ করে দেশে শান্তি শৃংখলা ফিরিয়ে আনার দাবী জানান আলেমরা।
সভায় নিউ ইয়র্কের শীর্ষ আলেমরা অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ থেকে ইসলামের নাম নিশানা মুছে দেয়ার উদ্দেশ্যে বিদেশী শক্তির ইন্ধনে মতিঝিল শাফলা চত্বরে রাতের অন্ধকারে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে আলেম উলামা ও সাধারণ মানুষকে গণহত্যা করেছে সরকার। বাংলাদেশে নাস্তিক বিরোধী চলমান আন্দোলনে ৫ মে দিবাগত রাত মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে প্রমাণ করেছে সরকার ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
হেফাজতে ইসলামের অসংখ্য নেতা কর্মী গুম, হত্যা ও গুলিবিদ্ধ হয়েছে উল্লেখ করে আলেমরা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনকে তদন্তের আহবান জানান। সরকারে চলমান গণহত্যা বন্ধে দ্রুত প্রদক্ষেপ নেয়ার জন্য জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। প্রতিবাদ সভা থেকে সরকারের মন্ত্রী সভার পদত্যাগ দাবী করা হয়।
মাজলিসুল উলামার প্রতিবাদ সভায় অধ্যাপক মাওলানা মহিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন, লানা মুফতী রুহুল আমীন, মাওলানা রফিক আহমেদ, ইমাম আব্দুর রহমান, হাফিজ মুজাহিদুল ইসলাম, হাফিজ রফিকুল ইসলাম, মাওলানা ইমাম আজিরুদ্দিন, মুফতী লুৎফুর রহমান ক্বাসিমী, মাওলানা আবু সুফিয়ান, মাওলানা আব্দুল্লাহ কামাল, মাওলানা আনাসসহ নিউ ইয়র্কের অর্ধশত শীর্ষ আলেম। সভা পরিচালনা করেন ইমাম জাকারিয়া মাহমুদ।
বাংলাদেশী আমেরিকান প্রগ্রেসিভ ফোরাম:
হেফাজতে ইসলামের নেতা কর্মীদের গণহত্যা নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদে ৫ম রোববার নিউইয়র্কের ব্রুকলীন ম্যাকডোনান্ড এভিনিউ’তে প্রতিবাদী র্যালী ও সভার আয়োজন করেছে বাংলাদেশী আমেরিকান প্রগ্রেসিভ ফোরাম (বাপফ)।
প্রবাসী বাংলাদেশীদের অংশ গ্রহণে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ র্যলিটি ব্রুকলীনের সেকেন্ড এভিনিউ থেকে শুরু করে ম্যাকডোনাল্ড এভিনিউ, দাহিল রোড, চার্চ এভিনিউ প্রদক্ষিণ করে। পরে ফোরামের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ আবু সামীহাহ সিরাজুল ইসলাম, সংগঠনের উপদেষ্টা অধ্যাপক কাজী মুহাম্মদ ইসমাঈল, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা ইব্রাহীম খলিল, মাওলানা সিহাবুদ্দিন, সাংবাদিক শহীদুল্লাহ কায়সার, নোয়াব আলী প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন সাইফুল্লাহ বেলাল।
সভায় বক্তারা বলেন, সরকার কর্তৃক আইনশৃংখলা রক্ষাকারীদের হীন দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করে নবী করিম (সা:) প্রেমিক ধর্ম প্রাণ মুসলমানদেরকে গণহত্যা চালাচ্ছে। হেফাজতে ইসলামের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আইন শৃংখলাবাহিনীর চদ্মাবরণে ভারতীয় বাহিনী নিবির্চারে গুলি চালায়ে শতশত মানুষকে হত্যা করেছে। ৫ মে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিতে হামলায় পুলিশ, র্যাব, বিজিবির ভয়াভহ আক্রমন ও গুলি চালানোর পাশাপাশি ছাত্রলীগ-যুবলীগ ক্যাডারদেরও অস্ত্র হাতে দেখাগেছে।
বাংলাদেশে চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধে জাতিসংঘসহ বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সংগঠনটি। এছাড়াও বাংলাদেশের মিডিয়ার প্রতি সরকারে নগ্ন হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবী জানায় সংগঠনের নেতারা। তারা বলেন, বাংলাদেশে গণহত্যাকে আড়াল করার জন্য সরকার বিরোধী হিসেবে পরিচিত মিডিয়া দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি ও আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছে সরকার।
আসসাফা ইসলামিক সেন্টার:
ইসলাম, আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) কে কটাক্ষকারী বিচার ও হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবীর বাস্তবায়নে চলমান আন্দোলনকারীদের রাতের অন্ধকারে হামলা চালিয়ে হত্যার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে আসসাফা ইসলামিক সেন্টার নিউ ইয়র্কের সভাপতি ডা: নুরুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুফতী লুৎপুর রহমান ক্বাসিমী। তারা বাংলাদেশে ইসলাম পন্থিদের হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদাযের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, বাংলাদেশে ইসলাম পন্থিদের উপর ইতিহাসের ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে সরকার। তারা বলেন, বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তর মুসলিম দেশকে ধ্বংশ করার জন্য অশুভ শক্তির ইঙ্গিতে ইসলাম ও রাসূল (সাঃ) এর নামে কুৎসা রটিয়ে বাংলাদেশে ধর্মীয় বিদ্বেষ ও সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশে ৯০ শতাংশ মানুষের ধর্মীয় মুল্যবোধের প্রতি সম্মান দেখিয়ে হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবী বাস্তবায়ন ও নবী প্রেমিক লোকদের হত্যা বন্ধের আহাবান জানান তারা।
No comments:
Post a Comment