Saturday, March 8, 2014

ইসলামী আন্দোলনে শহীদ কাদের মোল্লার নাম স্মরনীয় হয়ে থাকবে

imagesL84JU6WD ‘বাংলাদেশ সরকারের রাজনৈতিক প্রতিশোধস্পৃহার শিকার বাংলাদেশ Mollah-6rজামায়াতে ইসলামীর নেতা শহীদ আবদুল কাদের মোল্লার নাম এখন আর বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্যে আবদ্ধ নয়, তার স্থান বিশ্বের শতকোটি মানুষের হৃদয়ে। বিশ্বের দেশে দেশে যতোদিন ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন থাকবে, ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের কণ্ঠে শ্রদ্ধার সাথে তার নাম উচ্চারিত হবে।’
স্থানীয় সময় ৭ই মার্চ শুক্রবার সন্ধ্যায় (বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোরে) নিউইয়র্কের ব্রুকলীন বরোর কনি আইল্যান্ডে স্যাশন ভি’সিয়াচ অডিটরিয়ামে “সন্ত্রাসের কবলে বাংলাদেশ ও বিচারিক হত্যাকান্ডের শিকার শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা” শীর্ষক Munajat-15সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। কোয়ালিশন অফ বাংলাদেশী আমেরিকান এসোসিয়েশনস এর উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট চিকিৎসক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও কমিউনিটি এক্টিভিষ্ট ডা: আতাউল ওসমানী ও পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক কাজী মো: ঈসমাইল। সেমিনারে মূল নিবন্ধ পাঠ করেন শহীদ আবদুল কাদের মোল্লার সাংবাদিকতা জীবনের সহকর্মী আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক এখন সময় এর সম্পাদক, প্রবীণ সাংবাদিক কাজী শামসুল হক, হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট ফর বাংলাদেশ-এইচআরডিবি’র সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ড. আবুল কাশে, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আবু সামীহাহ Mollah-37সিরাজুল ইসলাম, এটর্নী মোহাম্মদ এ আজিজ, বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী মো: মোবাশ্বির, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা হেলালউদ্দিন, প্রগ্রেসিভ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান। সেমিনারের প্রস্তাবনা পাঠ করেন রাইটার্স ফোরাম অফ নর্থ আমেরিকার সভাপতি আবদুল্লাহ আল আরিফ। আলোচনা পর্ব শেষে শহীদ আবদুল কাদের মোল্লার রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন তার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সহপাঠি সাইদুর রহমান। সেমিনারে আবদুল কাদের মোল্লার উপর নির্মিত দু’টি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। স্ত্রীকে লিখা কাদের মোল্লার শেষ চিঠির ভিডিও চিত্র প্রদর্শনের সময় উপস্থিত নারী পুরুষের অনেকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
Mollah-43বক্তারা বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিষ্ট সরকার গত পাঁচ বছরের অধিক সময় যাবত দেশবাসীর উপর যে জুলুম চালিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশের ৪৩ বছরের ইতিহাসেই শুধু নয়, এই ভূখন্ডের জ্ঞাত ইতিহাসেও এর নজীর খুঁজে পাওয়া যাবে না। প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গী, সন্ত্রাসী ইত্যাদি অভিধায় চিহ্নিত করে তাদেরকে গ্রেফতার করছে, বিনাবিচারে আটকে রাখছে এবং নিজেদের স্বার্থোদ্ধারের জন্য প্রণীত ও সংশোধিত আইনে, দলীয় লোকদের দ্বারা গঠিত আদালতে তাদের শাস্তি বিধান করছে আন্তর্জাতিক নিয়মরীতি, বিধিবিধানের তোয়াক্কা না করে। তাদের এহেন খামখেয়ালীপনার নির্মম Mollah122শিকার শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা। নির্দোষ একজন লোককে কিভাবে কলঙ্কিত করার মধ্য দিয়ে দোষী সাব্যস্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তি বিধান করা যায়, বাংলাদেশ তা করে রাষ্ট্রীয়ভাবে মানবাধিকার লংঘনের লজ্জাজনক এক অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছে। এ সরকারকে আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে করে ক্ষমতা থেকে অবিলম্বে উৎখাত করতে না পারলে আরো অসংখ্য নিরীহ লোকের প্রাণ যাবে, বহু মায়ের বুক খালি হবে।
তারা আরো বলেন, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল নামে যে হাইব্রীড ট্রাইব্যুনাল গঠণ করে যুদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধের সাথে সম্পৃক্ততাহীন ব্যক্তিদেরকে তাদের রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে বিচারের মুখোমুখি করা সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য Mollah-22হতে পারে না। রাজনৈতিক মতপার্থক্য গণতন্ত্রে বহুল আচরিত একটি বিষয়। এর ব্যত্যয় ঘটানো তাদের পক্ষেই সম্ভব, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ অতীতেও গণতন্ত্রে আস্থাবান কোন দল ছিল না। বাংলাদেশকে তারাই একদলীয় স্বৈরশাসনের পথে ঠেলে দিয়েছিল। যার উচ্চ মূল্য পরিশোধ করেও তাদের শিক্ষা হয়নি। আবার তারা দেশকে অরাজকতার দিকে ঠেলে দিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রের অসারতা প্রমাণ করে একদলীয় বাকশাল চাপিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু জনগণ তাদের স্বপ্ন পূরণ হতে দেবে না। এর দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেবেই। তারা বলেন, ভারতের প্রত্যক্ষ মদদে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী বাংলাদেশ থেকে ইসলামকে বিদায় করার যে প্রক্রিয়া শুরু করেছিল এখনো তারা তাদের তৎপরতা থামায়নি। ১৯৭১ ও ১৯৭২ সালে আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা ঢালাওভাবে আলেম ওলামাদেরকে হত্যা করেছিল। ২০১৩ সালের মে মাসে তারা ঢাকার মতিঝিলকে আলেমদের রক্তে লাল করেছে। তাদের রক্তের ঋণ বাংলাদেশের ইসলামপ্রিয় জনগণ পরিশোধ করবে জালেম সরকারের পতন ঘটানোর মধ্য দিয়ে। ভারতের পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলাদেশকে ১৯৪৭ পূর্ব অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার চক্রান্ত কিছুতেই সফল হবে না।      
বক্তারা উল্লেখ করেন যে, একটি ধর্মনিরপেক্ষ ফ্যাসিষ্ট সরকারের কাছে কোন ধর্ম, দেশ, গণতন্ত্র নিরাপদ নয়। তারা জাতিকে বিভক্ত করেছে। বিভক্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হলে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আমাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য স্থির করতে হবে যে, বাংলাদেশে নাস্তিক্যবাদীরা বিজয়ী হবে, না ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের বিজয় ঘটবে।

সূত্র: (বিএনিউজ)

No comments:

Post a Comment